কোথায় রয়েছে এডিসি প্রশাসন?
তাদের কি এবার দুরবিন দিয়ে খোঁজতে হবে জনজাতিদের? প্রশ্ন তাদের মধ্যে ৷
এক ঘড়া জলের জন্য চাতক পাখির মতো আকাশের দিকে তাঁকিয়ে থাকতে হয় জনজাতিদের ৷ বছরের পর বছর এই একই ঘটনা চললেও, যেখানে রাজ্যে এডিসি নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে তীপ্রা মথা দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, এই কাজগুলি ৭৫ বছরে হয়নি,সেই কাজগুলি এডিসি-তে ক্ষমতায় আসার পর তীপ্রা মথা করে দেখাবে ৷ তারপরও এডিসি এলাকাগুলি সাধারণ পানীয় জলের অভাবে ভুগছে ৷ শিক্ষা আর স্বাস্থ্য তো দুরের কথা, পানীয় জলের জন্যে কখনো কখনো তাদের রাস্তা অবরোধ করতে হচ্ছে, কখনো বা এডিসি মহিলারা রাস্তা আটকে দাবি জানাচ্ছেন ৷ প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই ৷ এডিসি প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাজার হাজার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও এখন কোথায় রয়েছে তারা, দুরবিন দিয়ে খোঁজচ্ছেন জনজাতিরা ৷
মহিনীনগর এডিসি ভিলেজ, এখানে প্রায় ৩৫ পরিবারের ১৭৫ জন লোকের বসবাস ৷ প্রধানমন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর জলজীবন মিশন এই এলাকায় বটুয়াবাড়ির উপজাতির কাছে স্বপ্নের ফেরওয়ালা মাত্র, এবং এডিসি প্রশাসনের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রাপ্ত দল তাদের হাতের বাইরে ৷
বিলোনীয়া মহকুমার ঋষ্যমুখ ব্লকের অন্তর্গত মহিনী এডিসি ভিলেজ ৷ সম্পূর্ণ উপজাতি মানুষের বসবাস ৷ খোঁজ নেওয়ার বিন্দুমাত্র সময় নেই নেতৃত্বদের ৷ তীব্র জলের সমস্যা মহিনীনগর অন্তর্গত বটুয়াবাড়ির মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে ৷ দীর্ঘদিন গ্রামে জলের দাবিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত,ব্লক এমনকি শাসকদলের নেতাদের বার বার বলার পরও পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের বিন্দুমাত্র উদ্যোগ গ্রহণ করেন নি ৷ গ্রামের শিশু,বৃদ্ধ,বৃদ্ধা,নারী কখনো কাঁধের ভাড়ে করে কখনো বা মাথায় কলসী ডেকচি নিয়ে দুই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে জল সংগ্রহ করে এনে তৃষ্ণা মেটান ৷ রান্না,স্নান,শৌচালয়ের জন্য ব্যবহার করেন ৷ বিজ্ঞাপন সর্ব্বোষ্য সরকারের জলজীবন মিশন তাদের হাতের নাগালের বাইরে ৷ তার পাশাপাশি এডিসি সরকারে থাকা তীপ্রা মথার নেতৃত্বদেরকেও তারা খোঁজে পাচ্ছেন না কোনো জায়গাতেই ৷ একটি পাইপ মাটিতে শুয়ে দিয়ে দায়িত্ব খালাস করেছে নাকি পঞ্চায়েত এবং জল সম্পদ দপ্তর ৷ বর্তমানে সেই পাইপ দিয়েও তেমন জল উঠছেনা ৷
মঙ্গলবার সকালে বটুয়াবাড়ির রমনীরা বটুয়াবাড়ি অঙ্গণওয়াড়ি কেন্দ্রে জলের জন্যে সেই পাইপের সামনে একটি ডেকচি,কলসী,ঘটি,বাটি নিয়ে অধীর আগ্রহে বসে থাকেন জলের জন্যে ৷ চাতক পাখির মত তাঁকিয়ে থাকেন জলের তেষ্টায় ৷ তারপরও তাদের এই সমস্যা পূরণ হয়নি ৷ এখানে একজনের সাথে কথা বললে, তিনি জানিয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জলের পাইপ আছে জল সবসময় সেখানে থাকেনা ৷ বিদ্যুৎ থাকলেও জলের সমস্যা, বিদ্যুৎ না থাকলে জল পুরোপুরিভাবে বন্ধ থাকে ৷ প্রায় সময়ই বিদ্যুতের সমস্যা থাকে যার কারনে তৃষ্ণা মেটাবার জন্যে পানীয় জলটুকু তারা পান না ৷ পঞ্চায়েত,বিডিও,বিজেপি নেতা, মথা নেতা তারা সবাই জানেন ৷ সবাইকে জলের ব্যবস্থার জন্যে বহুবার বলা হয়েছে, তারপরও জল না খেয়ে মানুষ মরুক, এটাকেই যেন বলে সেটা বলেছে সেখানকারই একজন জনজাতি মহিলা দেবলক্ষ্মী ৷
তিনি জানিয়েছেন, এলাকায় দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে ৷ নয়তো পানীয় জলের অভাবে এলাকার মানুষকে মরতে হবে ৷