ত্রিপুরা রাজ্যে ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাজ্যবাসীকে হীরা দেবেন। এখন হীরার সাথে মানিকও দিয়েছেন। ত্রিপুরায় ধর্মনগরে জনবিশ্বাস যাত্রা উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ভূয়সী প্রশংসা করে একথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ত্রিপুরার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা সফল রূপ দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আজ ত্রিপুরায় জনবিশ্বাস যাত্রার সূচনা হচ্ছে। এই যাত্রার নাম জনবিশ্বাস রাখার জন্য তিনি প্রদেশ বিজেপি-কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, গণতন্ত্রে সরকারের কাজের মাধ্যমে মানুষের ভরসা জয় করা সম্ভব। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে বলেছিলাম ত্রিপুরার মানুষকে কমিউনিষ্টদের কুশাসন থেকে মুক্তি দেব। তাঁদের শিকড় ত্রিপুরার পবিত্র মাটি থেকে উপরে ফেলে দেব। সেই লক্ষ্যে চলো পাল্টাইয়ের শ্লোগান দিয়েছিলাম। ত্রিপুরার মানুষ সেই প্রয়াস সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে সার্থক করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরায় বিজেপির একজনও বিধায়ক ছিল না। সেই অবস্থা থেকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন, ব-ভারতে কেউ দেখেননি। বিজেপির প্রতি অগাধ আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসা রাখার জন্য আজ তিনি ত্রিপুরাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তাঁর কথায়, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন ত্রিপুরাকে কমিউনিষ্টদের কুশাসন থেকে মুক্তির জন্য ছিল। তাঁদের তিন দশকের শাসনে উন্নয়ন হয়নি, উল্টে জল, রেশন এমনকি থানায় মামলা করার জন্য ক্যাডারদের কাছে যেতে হতো। প্রশাসন ক্যাডারদের দ্বারাই পরিচালিত হতো, সেই নির্বাচন ওই পরিস্থিতির পরিবর্তনের লক্ষ্যে ছিল। তেইশের নির্বাচন বিকাশের ভীত মজবুত করে সমৃদ্ধ ত্রিপুরা নির্মাণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে, দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন তিনি।
তাঁর দাবি, যুব প্রজন্মের কর্মসংস্থান, মহিলাদের সুরক্ষা এবং জনজাতিদের অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্যই তেইশের নির্বাচনে বিজেপির পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ, সমৃদ্ধ ও সুস্থ ত্রিপুরার শ্লোগান দিয়ে জনবিশ্বাস যাত্রার আজ সূচনা করছি।
এদিন তিনি ২০১৮ সালে ত্রিপুরা বিজেপি জোট সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর জনকল্যাণে কাজের দীর্ঘ তালিকা তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, এনএলএফটি উগ্রপন্থীদের সাথে শান্তি সমঝোতা, ব্রু শরণার্থীদের দুই দশকের অধিক সময়ের সমস্যা সমাধান বর্তমান সরকারের জন্যই সম্ভব হয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ২.৭০ লক্ষ পরিবারের কাছে বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ, ৪.১৫ লক্ষ বাড়িতে পানীয় জল, ৩.৮০ লক্ষ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর বন্টন ডবল ইঞ্জিন সরকারের জন্যই ত্রিপুরবাসী ওই সুবিধা পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, যোগাযোগ ক্ষেত্রে ১০ হাজার কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগ, ২৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ২৬২ কিমি জাতীয় সড়ক নির্মাণ বিজেপি সরকারের কারণেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বাম জমানায় কর্মচারীরা পঞ্চম বেতন কমিশনের সুযোগ পেয়েছিলেন। ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিপ্লব কুমার দেব কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন দিয়েছেন।