২০১৫ সালে ২রা সেপ্টেম্বর ভারত বনধ কে কেন্দ্র করে তৎকালীন দক্ষিণ জেলার জেলা ও দায়রা জর্জ কে আদালতের মধ্যেই শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে বিলোনিয়া তিন শীর্ষ বাম নেতা তাপস দত্ত,বাবুল দেবনাথ ও ত্রিলোকেশ সিংহ কে নির্যাতনের সাজা দিয়েছিলো নিম্ন আদালত ৷
এই আদেশের বিরুদ্ধে তারা দায়রা আদালতে আপিল করেছিলো ৷ বুধবার সেই আপিল মামলার রায় ঘোষণা করেন দায়রা আদালত ৷ তিন অভিযুক্তকে দেওয়া নিম্ন আদালতের আদেশই বহাল রাখেন দায়রা আদালত ৷ এই রায় ঘোষণার সাথে সাথেই বিলোনিয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ৷
দায়রা আদালত যে তিনটি আপিল মামলার রায় ঘোষণা করেন সেগুলি হচ্ছে আপিল নং ১, ২০২২, আপিল নং ২, ২০২২ এবং আপিল নং ৩, ২০২২ ৷
এই মামলার বিষয়বস্ত হলো, গত ২/৯/২০১৫ দিন সিপিআইএম দল ২৪ ঘন্টা ভারত বনধের আহ্বান করেন, এই বনধ কে কেন্দ্র করে সিপিআইএম দলের এই তিন দুস্কৃতি আদালতে বেআইনি ভাবে প্রবেশ করে আদালতের কর্মী এবং জেলা ও দায়রা আদালতে তৎকালীন জর্জ রোহীদাস পাল কে দৈহিক হেনস্তা এবং উনাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ওই আদালত থেকে চলে যাওয়ার জন্য তারা বল প্রয়োগ করে ৷
এই ঘটনার আঁচ পেয়ে ঘটনাস্থলের কিছু দূরে থাকা বিলোনিয়ার এসডিপিও তখন আদালতের সামনে আসেন এবং তিন দুস্কৃতির হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করেন ৷ ঘটনাস্থলে পুলিশকে উপেক্ষা করে দুস্কৃতিরা পালিয়ে যায় ৷
পরবর্তী সময়ে বিলোনিয়ার SDPO বিলোনিয়া থানাতে দুস্কৃতিকারীগনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ৷ এবং মামলা দায়ের করার পর বিলোনিয়া থানার ওসি সাব ইন্সপেক্টর শঙ্কর সাহাকে এই মামলার তদন্ত ভাড় দেন ৷ ওসি শঙ্কর সাহা তখন মামলার তদন্ত শুরু করেন ৷ পরবর্তী সময়ে তদন্ত শেষে বিবাদী তাপস দত্ত, ত্রিলোকেশ সিংহা এবং বাবুল দেবনাথ এর নামে ভারতীয় দন্ড বিধি ৪৪৭,৩৫৩,৩৩২ এবং 34 IPC ধারায় চার্টশিট দাখিল করেন ৷ চার্টশিট দাখিল করার পর নিম্ন আদালতে মামলাটি পরিচালনা হয় ৷ মামলা বিচার প্রক্রিয়ার সময় আদালত ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যবাক্য গ্রহণ করেন এবং বিবাদীগনও একজন তাদের সাফাই সাক্ষী প্রদান করেন ৷ পরবর্তী সময়ে আদালত গত ৯/১২/২০২১ সালে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৪৭ এবং ৩৪ ধারায় বিবাদীগনকে ২ মাসের সাজা এবং ৫০০ টাকা জড়িমানা করেন (অনাদায়ে আরো ১০ দিন) এবং ৩৫৩ এবং ৩৪ ধারায় বিবাদীগনকে দু বছরের সাজা ঘোষণা করেন ৷
পরবর্তী সময়ে বিবাদীগন নিম্ন আদালতের রায়ের পর জেলা ও দায়রা আদালতে উক্ত মামলার আপিল করেন, আদালতে বিবাদী পক্ষের সাফাই ছিলো যে, ঘটনার সময় বিবাদীগন আদালত প্রাঙ্গণে আসেনি, কিন্ত আদালত উনাদের রায় উল্লেখ করেছেন যে, এখানে দু ধরনের সাক্ষবাক্ষ্য পাওয়া যায়, একটা সাক্ষ হচ্ছেন আদালতের কর্মীরা এবং আরেকটি সাক্ষ হচ্ছে নিরপেক্ষ সাক্ষী ৷ নিরপেক্ষ সাক্ষী এবং বিবাদীগনের ছাপা সাক্ষীতে বিবাদীগনের উপস্থিতি পাওয়া যায়, তাছাড়া আদালতের কিছু স্থানীয় কর্মী ছিলো তারাও বিবাদীগনের উপস্থিতি পরিলক্ষিত করতে পেড়েছে ৷ ফলে বিবাদীগনের ঘটনা আদালতে প্রমান হওয়াতে, আদালত উনার মন্তব্য প্রকাশ করেন যে, ‘আদালত হচ্ছে একটা ন্যায়ের মন্দির, বিবাদীগন এই ন্যায়ের মন্দির বন্ধ করতে চেয়েছেন ৷
এই জন্য মাননীয় আদালত নিম্ন আদালতের রায় কে পুর্নবহাল রেখেছেন ৷