ছয়টি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিল বন দপ্তর, উত্তপ্ত গোটা এলাকা ! !
কোর্টের নির্দেশে উচ্ছেদ ৬ টি মুসলিম পরিবার ৷ ঘটনা বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় গোমতী জেলাধীন বাগমা বিধানসভা কেন্দ্রের রাইয়াবাড়ি এলাকায় ৷
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গোমতী জেলা বন দপ্তর ও রাধাকিশোরপুর থানার যৌথ উদ্যোগে কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে বাগমা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রাইয়াবাড়ি এলাকার ছয়টি মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে ৷
প্রথম অবস্থায় রাস্তা অবরোধে সামিল হয় গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারগুলি ৷ কিন্ত পুলিশ অবরোধকে দূরে সরিয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করতে শুরু করে ৷ পুলিশ লাঠিসোটা নিয়ে নির্মমভাবে ভাঙচুর শুরু করে ছয়টি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি ঘরের উপর ৷ চোখের সামনে বসত বাড়ি ভাঙতে দেখে পরিবারের মহিলারা চিৎকার চেঁচামেচি ও কান্নায় ভেঙে পড়ে ৷
অপরদিকে বন দপ্তর থেকে সরকারি ওই জায়গায় রাবার গাছ কেটে ফেলা হয় ৷ এক ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ আর চারিদিকে আকাশ বাতাস যেন কান্নায় ভারী হয়ে উঠে ৷ কোলে ছোট শিশু নিয়ে এক মা আর্তনাদ ও চিৎকার করতেই একটা সময় অভিশাপ দিতে শুরু হয় সরকার ও প্রশাসনকে ৷ তবুও প্রশাসন নির্মম ভাবে বাড়ি ঘর ভেঙে ফেলে ৷
পরবর্তী সময় গ্রামবাসীরা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দীর্ঘ বহু বছর ধরে এই জায়গায় তারা বসবাস করে আসছে ৷ ১৯৯৯ সালে তৎকালীন ডিএম তাদেরকে এই জায়গায় বসবাস করার জন্য পুনর্বাসন দিয়েছিলেন ৷ এছাড়া সরকারি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, বৈদ্যুতিক আলো ৷ সরকারি ভাবে আরও নানান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় তাদের ৷
তারা জানিয়েছেন শুক্রবার গোটা বিষয় নিয়ে ত্রিপুরা হাইকোর্টে আরও একটি মামলা দায়ের করা হবে ৷ নানা বিতর্কের মাঝে এদিন সংখ্যালঘু ছয়টি মুসলিম পরিবারের বাড়ি ঘরকে পুলিশ বুলডোজার চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে ৷ নষ্ট হয়েছে বাড়ি ঘরের বহু জিনিষ পত্র ৷
এদিকে যখন ধ্বংস লীলা চলছিল অন্যদিকে একের পর এক বহু সংখ্যালঘু মহিলা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল মাটিতে ৷ এই ধরনের দৃশ্য গোটা দিনভর চলতে থাকে রাইয়াবাড়ি এলাকায় ৷ কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও প্রশাসন জল কামান, কাঁদানো গ্যাস এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ঘটনাস্থলে বিশাল পরিমানে মজুত করে ৷ দিনভর ব্যপক উত্যক্ত থাকে গোটা রাইয়াবাড়ি মুসলিম এলাকাটি ৷ কিন্ত প্রশাসনের এই নির্মমতার সাক্ষী থাকতে হয় এদিন গোটা এলাকাবাসীকে ৷ সমস্যার সমাধানের কোনও সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে সংখ্যালঘুদের উপর অকথ্য অত্যাচারকে কোনও ভাবেই ভাল দৃষ্টিতে দেখছেন না শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মহল ৷